নগর প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র আয়োজনে “প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যাবলী বিষয়ক অবহিতকরণ” শীর্ষক মতবিনিময় সভা আজ রবিবার(২৪ আগস্ট) ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চিটাগাং চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’র সদস্য ড. আফরোজা বিলকিস ও পরিচালক বিমলেন্দু ভৌমিক, চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ শওকত আলী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক মোঃ সোলায়মান, উইম্যান চেম্বারের পরিচালক আমিনা শাহিন,কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিঃ’র নির্বাহী পরিচালক মিজানুর রহমান মিজান, বিএসআরএম’র সঞ্জয় কমুার ঘোষ ও মোঃ ইসমাইল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী, জেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার ও রাবার ওনার্স এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’র সদস্য ড. আফরোজা বিলকিস বলেন, ব্যবসা ক্ষেত্রে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা চর্চা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকার ২০১২ সালে ‘বাংলাদেশ কম্পিটিশন এ্যাক্ট’ প্রণয়ন করে এবং এ আইন বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করে। তিনি বলেন, এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, খাদ্যপণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত করে যাতে কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে এবং কারসাজির মাধ্যমে যাতে কেউ দ্রব্যমূল্য বাড়াতে না পারে সে জন্য এ ধরণের আইন তৈরি করা হয়েছে। বাজারে অবৈধ যোগসাজস রোধ করে সব প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ করা প্রতিযোগিতা কমিশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, আইন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কমিশন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় করছে। একই সাথে ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়ে উচ্চতর গবেষণার মাধ্যমে আইনকে আরো সহজ ও যুগোপযোগী করতে কমিশন কাজ করছে।
চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় শিল্প ও বাণিজ্য খাতে নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। তবে, কিছু অসাধু কার্যক্রম যেমন সিন্ডিকেট, কারসাজি এবং একচেটিয়া ব্যবসার কারণে বাজার স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই জায়গাটিতেই বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কমিশনের মূল লক্ষ্য হলো ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা, বাজারে স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং সর্বোপরি ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা করা।
তিনি বলেন, আইনটি বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য খাতে এক নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। এটি একটি সুষ্ঠু এবং ন্যায্য ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করছে। তবে, এর পূর্ণ সুফল পেতে হলে নিয়মিত পর্যালোচনা, বাস্তবায়ন কৌশল উন্নত করা এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। তিনি কমিশনকে অন্যান্য আইন বিশেষ করে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন আইনসহ সরকারের অন্যান্য আইনের সাথে যাতে সাংঘর্ষিক না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিযোগিতা আইনকে আরও কার্যকর করার আহবান জানান।
সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে এই আইনের বাইরে রাখা হয়েছে। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই প্রতিযোগিতা আইনকে সার্বজনীন করার লক্ষ্যে প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর,বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ব্যবসায়ী ও মিডিয়াসহ সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীরা কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও কমিশনকে লক্ষ্য রাখতে হবে।




