ডেস্ক রিপোর্ট: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন ৮০তম অধিবেশনে একই দিনে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এই অধিবেশন শুরু হবে। আর ২৬ সেপ্টেম্বর এই তিন নেতার ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তাদের শেয়ার করা প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই শাহবাজ শরিফের বক্তৃতা নির্ধারিত রয়েছে। ফলে ইসলামাবাদের জন্য সরাসরি নয়াদিল্লির বক্তব্যের জবাব দেওয়ার কৌশলগত সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে কূটনীতিকরা মনে করছেন।
শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে পাকিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলে থাকবেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার ও প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক ফাতেমি।
৮০তম সাধারণ পরিষদ অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৯ সেপ্টেম্বর। তবে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। চলতি বছর অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য- ‘বেটার টুগেদার: এইটি ইয়ার্স অ্যান্ড মোর ফর পিস, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’।
প্রথা অনুযায়ী প্রথম বক্তৃতা করবেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। এরপর বক্তব্য দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই হবে জাতিসংঘে তার প্রথম ভাষণ।
পাকিস্তান ও ভারতের পর একই দিনে ভাষণ দেবেন ইসরাইল, চীন এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। ফলে শাহবাজ-মোদি-ইউনূসের ধারাবাহিক ভাষণ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা আনবে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, ভারত যেখানে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রশ্নকে গুরুত্ব দেবে, পাকিস্তান সেখানে কাশ্মীর ইস্যু ও আঞ্চলিক শান্তিকে সামনে আনতে চায়। এক জ্যেষ্ঠ পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেছেন, বিশ্ব ইতোমধ্যেই দেখেছে কীভাবে দক্ষিণ এশিয়া মুহূর্তেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কাশ্মীর সমস্যার ন্যায্য সমাধান ছাড়া জাতিসংঘের শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি এ অঞ্চলে বাস্তবায়িত হবে না।
জাতিসংঘের এই অধিবেশনটি ব্যস্ততম কূটনৈতিক মৌসুম হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। একদিকে গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধ, অন্যদিকে ইউক্রেন সংঘাত ও মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধপরিস্থিতির পরবর্তী অভিঘাত-সব মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিতিশীলতা বিশ্বমঞ্চে বিশেষভাবে আলোচিত হবে।
অধিবেশনের সময়সূচি অনুযায়ী ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ জলবায়ু ইভেন্ট এবং ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূলের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক।